মায়াপুর দর্শন

 


পশ্চিমবঙ্গের পর্যটন মানচিত্রে মায়াপুর স্বমহিমায় প্রতিষ্ঠা পেয়েছে।অতীতের মিয়াপুর আজকের মায়াপুর নামে পরিচিত।আজ থেকে প্রায় ৫০০ বছর আগে এই মায়াপুর-নবদ্বীপে জম্ন নিয়েছিলেন মহাপ্রভু শ্রী চৈতন্য।মায়াপুর তার জগৎজোড়া খ্যাতি পেয়েছে ইস্কন মন্দিরের জন্য।

    শিয়ালদহ থেকে ট্রেন ধরে কৃষ্ণনগর এবং সেখান থেকে গাড়ি করে মায়াপুর যাওয়া যায় বা হাওড়া থেকে ট্রেনে নবদ্বীপ ধাম সেখান থেকে গঙ্গা নদী পার করে মায়াপুর আসা যায়।এছাড়া নিজস্ব গাড়িতে জাতীয় সড়ক ধরে মায়াপুর আসা যায়।

    ইস্কন মন্দিরের সামনে প্রচুর খাওয়ারের দোকান রয়েছে।ইস্কন মন্দির থেকে ৩কিমি দূরে অবস্থিত বামন পুকুর।এই বামন পুকুরেই রয়েছে তিনটি ঐতিহাসিক পর্যটন কেন্দ্র।রাজাপুর জগন্নাথ দেবের মন্দির।এটিও মায়াপুর ইস্কন মন্দিরের অন্তর্গত।ছোটোখাটো হলেও মন্দিরটি তার সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত।

    এই বামনপুকুর বাজারেই রয়েছে চাঁদকাজীর সমাধি।জনশ্রুতি, এই চাঁদকাজী সাহেব ছিলেন মহাপ্রভুর ঘোর বিরোধী।কিন্তু পরে চৈতন্য দেবের ভক্ত হয়েছিলেন এই কাজী সাহেব।


    এখানেই রয়েছে বাংলার রাজা বল্লাল সেনের রাজবাড়ী।বামনপুকুর বাজার থেকে প্রায় ৫০০মিটার দূরেই রয়েছে এই স্থান।রাজবাড়ীর কিছু জিনিসেরই এখন আর অস্তিত্ব নেই সব ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে।এই ধংসাবশেষটির উচ্চতা প্রায় ৩০ ফুট এবং লম্বা প্রায় ৪০০ ফুট।


    এখানে রয়েছে আরো এক দর্শনীয় স্থান যা হলো শ্রীচৈতন্যদেবের মাসিবাড়ি ও শ্রীচৈতন্যদেবের জন্মস্থান।

    মায়াপুর ইস্কনে ২৪ ঘন্টা ব্যাপী নাম সংকীর্তন আসর চলে।ইস্কনের জন্মলগ্ন থেকে এখানে নাম সংকীর্তন চলছে।ইস্কনের মধ্যে মধ্যাহ্ন ভোজের ব্যবস্থা রয়েছে।যার জন্য কুপন সংগ্রহ করতে হয়।এখানে রয়েছে শীল প্রভুপাদের সমাধি মন্দির।যা পুস্পপাদ মন্দির নামেও পরিচিত।১৯৯৫ সালের ২৬শে ফেব্রুয়ারী মায়াপুর ইস্কনের প্রতিষ্ঠাতা শীল প্রভুপাদের জন্মশত বার্ষিকীতে এই মন্দিরটি নির্মাণ করা হয়।


    অপূর্ব সৌন্দর্য্যের অধিকারী এই মায়াপুরের ইস্কনের বৈদিক প্ল্যানিটোরিয়াম মন্দির।গত ৮-৯ বছর ধরে এই মন্দিরের কাজ চলছে।এই মন্দিরটি হতে চলেছে এশিয়ার বৃহত্তম মন্দির।

মায়াপুরের গোশালায় রয়েছে বিভিন্ন প্রকারের গরু।এদের নামও আলাদা।শ্যামলী, ভবলী থেকে শুরু করে কৃষ্ণা, রাধা, লক্ষ্মী প্রভৃতি।গোশালার সামনে রয়েছে দুগ্ধজাত দ্রব্যের দোকান।এই দোকানে খাঁটি ঘি, পনির, দই পাওয়া যায়।এখানকার দইয়ের স্বাদ খুবই সুন্দর।



    এখানেই রয়েছে চন্দ্রদ্বয় মন্দির।বিকেলে এই মন্দিরে প্রচুর মানুষের সমাগম হয়।এই মন্দিরের সন্ধ্যা আরতি জগৎ বিখ্যাত।এখানে রয়েছে রাধাকৃষ্ণের বিগ্রহ, সখীগণের বিগ্রহ, নরসিংহ দেবের বিগ্রহ এবং পূর্ব পাশেই রয়েছে শ্রীচৈতন্য দেব ও তার সঙ্গীদের বিগ্রহ।



    প্রতিদিন বিকেলে ইস্কনের সুসজ্জিত রথের নগর কীর্তন বের হয়।প্রচুর মানুষ এই নগর কীর্তনে অংশগ্রহণ করেন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ