ভগবান বিষ্ণুর কূর্ম অবতারের কাহিনী


     ভগবান বিষ্ণুর কূর্ম অবতার।ভগবান শ্রী বিষ্ণু পাপের বিনাশে ও দেবতাদের সহাতায় ১০ অবতারে তিনি উপস্থিত হয়েছিলেন।পুরাণ শাস্ত্রে, ভক্তিশাস্ত্রে, বিভিন্ন গ্রন্থে তার প্রচুর উল্লেখ পাওয়া যায়।ভগবান বিষ্ণুর ১০ অবতারের মধ্যে অন্যতম হলো এই কূর্ম অবতার।এই কূর্ম শব্দের অর্থ হলো "কচ্ছপ"।এই শ্রীবিষ্ণুর দ্বিতীয় অবতার।এই অবতারকে সত্যযুগের অবতার হিসেবে মানা হয়।এই কূর্ম অবতারের পুজো হয়।এর নির্দিষ্ট মন্দির রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশের কূর্মায়ু মন্দির।প্রতিটি দেবদেবীর আবির্ভাব এবং তাদের অবতার হিসেবে উপস্থিত হওয়ার পেছনে একটি সুন্দর মাহাত্ম্য রয়েছে।

    দুর্বাশা মুনি দেবরাজ ইন্দ্রকে একটি দিব্য পুষ্পমাল্য উপহার হিসেবে দিয়েছিলেন।দেবরাজ ইন্দ্র সেই পুস্পমাল্যটিকে মাথায় প্রণাম করে তাঁর বাহন ঐরাবতের মাথায় রাখলেন।কিন্তু ঐরাবত ওই মালার গুরুত্ব না বুঝেই সে তার শুঁড়ে করে পাকিয়ে ধরে মালাটিকে ঘুরিয়ে মাটিতে ফেলে দেয়।দুর্বাশা মুনির খুব ক্রোধশীল ছিলেন।কথায় কথায় তিনি অভিশাপ দিয়ে দিতেন।এই ঘটনাটি দেখে দুর্বাশা মুনি অভিশাপ দিলেন দেবতারা তাদের শক্তি হারাবে, শ্রীহীন হয়ে যাবে এই স্বর্গরাজ্য।শ্রীহীন, সৌন্দর্য্যহীন, লক্ষ্মীহীন হয়ে পড়বে স্বর্গ।উপায় না দেখতে পেয়ে সমস্ত দেবতাগণ প্রজাপতি ব্রহ্মার শরণাপন্ন হলেন।প্রজাপতি বললেন সমুদ্র মন্থন করে অমৃতকে বের করে নিয়ে আস্তে হবে।কিন্তু দেবতাদের একার পক্ষে সমুদ্র মন্থন করা সম্ভব নয়।অমৃতের সমান বন্টনে ঠিক করা হয় দেব-অসুর উভয় মিলে সমুদ্র মন্থন করবে।

    মন্দার পর্বতকে মাঝে রেখে তাকে মন্থন দণ্ড হিসেবে ব্যবহার করা হয়।রজ্জু হিসেবে ব্যবহার করা হল বাসুকী নাগকে।অসুরেরা যেহেতু ঔদ্ধত্বপূর্ণ  তাই তারা ঠিক বাসুকী নাগের মাথার দিকে এবং দেবতারা লেজের দিকে ধরে মন্থন শুরু হয়।কিন্তু এতো বড় পর্বতের ভার একা বাসুকী নাগের পক্ষে রাখা সম্ভব নয় ফলে ক্রমশ সমুদ্রের জলে নিমজ্জিত হতে থাকে মন্দার পর্বত।কিত্নু সমুদ্র মন্থন করতে গেলে পর্বতকে ভেসে থাকতে হবে।

    তখন ভগবান বিষ্ণু এই কাজ সুসম্পন্ন করার জন্য তিনি এক বিরাট কচ্ছপের অবতারে আবির্ভুত হয়েছিলেন।কূর্ম অবতার।তার ওই বিরাট পৃষ্ঠদেশের ওপরে তিনি সমুদ্রমন্থনের সময় মন্দার পর্বতকে ধরে রাখেন।এরপর  একে একে কৌসবমনি থেকে শুরু করে বিষ্ণুদেবের রাগিনী শক্তি যিনি পরমাপ্রকৃতি শ্রীলক্ষ্মী উঠে এলেন।বাসুকী নাগের শরীর মন্দার পর্বতে ঘর্ষণের ফলে যে বিষ উঠে এসেছিলো তা স্বয়ং মহাদেব পান করেছিলেন এবং নীলকণ্ঠ হয়ে সারা জগৎকে এই বিষের প্রভাব থেকে রক্ষা করেছিলেন।তৎপরবর্তীতে ধন্বন্তরি আবির্ভুত হয়েছিলেন অমৃত ভাণ্ড নিয়ে।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ