মা মঙ্গলচন্ডীর ব্রতবিধি ও ব্রতকথা

 


ব্রতের নিয়ম- জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রতি মঙ্গলবারে এই ব্রত পালন করিতে হয়। পুরোহিত দ্বারা মঙ্গলচন্ডীর পূজা করাইয়া ব্রত                        শেষে  ব্রতকথা শ্রবণ করিতে হয়। 

ব্রতের উপকরণ- সতেরোটি গোটা সুপারি, ধান, দূর্বা, ফল-বেলপাতা, পৈতা, পাকাআম, কাঁঠাল ইত্যাদি।

ধ্যান- ওঁ যৈষা ললিতকান্তাখ্যা দেবী মঙ্গলচন্ডিকা।বরদাভয়হস্তা চ দ্বিভুজা গৌরদেহিকা।রক্তপদ্মাসনাস্থ চ                                  মুকুটজ্বলমন্ডিতা।রক্ত কৌষেয় বস্ত্রা চ স্মিতবত্ত্রা শুভাননা।নবযৌবনা সম্পন্না চার্বঙ্গী ললিতপ্রভা।

পূজা মন্ত্র- ওঁ হ্রীং মঙ্গলচন্ডিকায়ৈ দেব্যৈ নমঃ।পরে ললিতকান্তি দেবী ও দিবাকরবাসিনী দেবীর পঞ্চোপচারে পূজা                             করিবেন।

প্রণাম মন্ত্র- ওঁ সর্ব্বমঙ্গল মঙ্গল্যে শিবে সর্বার্থসাধিকে।শরণ্যে ত্র্যম্বকে গৌরী নারায়ণি নামোহস্ত্ততে।

ব্রতকথা - রত্নাবতী নামে এক ভক্তিমতী সধবা ব্রহ্মাণী ছিল।কামিনী নামে একটি নাপতিনি তার সই ছিল।একদিন                     নাপতিনি বললে- সই, আমার খুবই দুঃখ-কষ্ট, কি করি বলতে পারো? ব্রহ্মাণী বলে - জ্যৈষ্ঠ মাসের প্রতি            মঙ্গলবারে মঙ্গলচন্ডীর ব্রত কর।সইয়ের কথা শুনে সে ব্রত করলো, তার ফলে তার সব দুঃখ দূর হলো।কিছুদিন পরে সে সুখ সহ্য করতে না পেরে, কি করবে ঠিক করতে না পেরে বেনেদের লাউগাছ চিরে দিল, তাতে গাছ আরো বেড়ে গেলো।শেষে যুক্তি করে ভাগাড়ে গিয়ে রাজার মরা হাতি ধরে কাঁদতে লাগলো, হাতিটা মঙ্গলচন্ডীর কৃপায় বেঁচে গেলো।এ সংবাদ শুনে রাজা নাপতিনিকে খুব আদর যত্ন করলো।শেষে বিষের নাড়ু তৈরী করে নাপতিনি জামাইবাড়ি পাঠালো।কিন্তু তাতেও তারা মরলো না.তখন নাপতিনি ব্রত করা বন্ধ করতেই তার বাড়ি-ঘর পুড়ে ধ্বংস হয়ে গেলো।মেয়ে জামাই মরলো।নাপতিনি কাঁদতে লাগলো।শেষে মা মঙ্গলচন্ডী ছদ্মবেশে দেখা দিলেন।নাপতিনি কাঁদতে কাঁদতে তার পায়ে ধরে সব কথা বললো।মা মঙ্গলচন্ডী সব শুনে তাকে আবার ব্রত করতে বললেন।ব্রত করার ফলে নাপতিনি আবার ঘর-বাড়ি জমি-জমা ফিরে পেল, মেয়ে-জামাই বেঁচে উঠলো।মা মঙ্গলচন্ডীর দয়ায় তার সব দুঃখ ঘুচে গেলো।সেই থেকে এই ব্রত চারিদিকে প্রচার হল।

    ---- অথ মা মঙ্গলচন্ডীর ব্রতকথা সমাপ্ত ----

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ